॥ একশ টাকায় পুলিশে চাকরি ॥
পঞ্চগড়ে থেকে মো. কামরুল ইসলাম কামু :: টাকা ছাড়া চাকরি পেয়ে ওদের চোখে-মুখে আনন্দ অশ্রু বইছে। শুধুমাত্র মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি পেয়ে গরিব মা-বাবার দুঃখ-কষ্টের অবসান হবে বলে ওরা অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন। টাকা ছাড়া পুলিশে চাকরি হয়েছে- এমন কথা মানুষজন বিশ্বাস করতে না চাইলেও এ সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেছে পুলিশ। বুধবার (২৪ নভেম্বর) রাতে পঞ্চগড় জেলায় ‘কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষা’র ফলাফল বের হয়েছে। দীর্ঘ পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ২১ পদের জন্য মোট ২১ জনসহ আরও পাঁচজনকে অপেক্ষমাণ হিসেবে রাখা হয়েছে। দীর্ঘদিনের মধ্যে এ নিয়োগে টাকা ছাড়াই চাকরি হয়েছে প্রার্থীদের। চাকরি-বিজয়ীরা চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হওয়ার পর তাদের চোখে-মুখে ছিল আনন্দ অশ্রু। ‘পুলিশে চাকরি মানেই টাকার খেলা এ দুর্নাম থেকে একেবারেই দূরে ছিল পুলিশ। প্রার্থীরা শুধুমাত্র একশ’ টাকার পে-অর্ডার দিয়েই চাকরি পেয়েছেন’ -প্রার্থী, অভিভাবক ও প্রতিবেশীরা এমনটাই জানিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ার পর চাকরি প্রার্থী, স্থানীয় নেতা, মধ্যস্বত্ব ভোগী ও দালালদের দৌড়াদৌড়িও তেমনটা ছিল না। নিয়োগজুড়ে দালালদের প্রতি জেলা পুলিশের নজরদারিও ছিল বেশ। কোনো রকম ঘুষ ও নেতাদের তদবির মাথায় না নিয়ে এ নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে বলে নানা সূত্র জানিয়েছে। নিয়োগ চূড়ান্ত হওয়া জাহাঙ্গীর আলম মুসা, রহিমা আক্তার সুমি, কেয়া রানী সেন, সৌরভ চন্দ্র বর্মন, হযরত আলী, উম্মে হাবিবা প্রমুখ তাদের অনুভূতি প্রকাশ করে জানিয়েছেন, ‘টাকা ছাড়া চাকরি পেয়ে আমরা অভিভূত। কেউ টাকা চায়নি বা এর কোন প্রশ্নও ওঠেনি।’ কৃষক, নিম্নবিত্ত- এসব পরিবারের মানুষের আশপাশে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- চাকরির জন্য কোন টাকা লাগেনি। সূত্র আরও জানায়, পঞ্চগড়ে কনস্টেবল পদে চাকরিতে কোটাও মানা হয়েছে দৃঢ়ভাবে। ২১ শূন্যপদের বিপরীতে অনলাইনে আবেদন পড়ে কয়েক হাজার। সেখান থেকে বাছাই করে প্রাথমিকভাবে ৮৪৮ জনকে নির্বাচিত করা হয়। শারীরিক পরীক্ষা শেষে ২৮৩ জনকে ডাকা হয় লিখিত পরীক্ষার জন্য। লিখিত পরীক্ষা শেষে ৬৩ জন মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। পঞ্চগড় জেলার ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগ এর ফলাফল ঘোষণা করা হয় শতভাগ স্বচ্ছতার সাথে পুরুষ কোটায় ১০ জন, মহিলা কোটায় ০৩ জন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ০৫ জন, এতিম কোটায় ০২ জন ও পুলিশ পোষ্য কোটায় ০১ জন; সর্বমোট ২১ জন প্রার্থী মাঠ পর্যায়ে এবং লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে বাছাই করা হয়। ফলাফল ঘোষণা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী; অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ঠাকুরগাঁও; অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, রংপুর; আরআইসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ। পুলিশ সুপার চূড়ান্তভাবে যাচাইকৃত প্রার্থীদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান এবং বিভিন্ন দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বলেন, সরকার ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন মহলের নির্দেশনায় কোনো রকম তদবির, ঘুষ ছাড়া এ কার্য সম্পাদন করা হয়েছে। তদবির আসলেও মানা হয়নি। যদি এ নিয়োগের বিষয়ে কোনো অর্থ লেনদেন কেউ করে থাকে, তা পুলিশকে জানানোর অনুরোধ করেছেন তিনি। পুলিশ সুপার বলেন, এ ব্যবস্থায় জনগণের কাছে পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে বলে আমার ধারণা। পুলিশের চাকরিতে টাকা লাগে- এ ধারণা আর কখনই সত্য হবে না।
Average Rating
বিস্তারিত পড়ুন...
পল্লী বিদ্যুতের অনিয়ম দুর্নীতি ও কর্মচারি- কর্মকর্তাদের দাবি বাস্তবায়নে কর্মবিরতী
ছিনতাইকালে চাপাটিসহ ধাওয়া দিয়ে ছিনতাইকারীকে আটক করল মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ
আওয়ামীলীগের ৭৫ তম প্রতিষ্ঠা বাষির্কী