ভোলা জেলা প্রতিনিধি,,,, গত দুই দিন ধরে ভোলা সদর উপজেলার সদর রোডসহ বিভিন্ন ফুলের দোকানে ফুল সাজিয়ে রেখে ফুলে পানি স্প্রে করে সেগুলোকে তাজা রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাদের লক্ষ্য ছিল তাজা ফুল ক্রেতাদের হাতে তুলে দেওয়া। পাশাপাশি নিজেদের বিক্রি বাড়ানো। আর কিছু ফুলের তোড়া আগাম তৈরি করে রেখেছেন ভিড়ের সময় দ্রুত বিক্রির জন্য। পহেলা ফাল্গুন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে বাহারি জাতের ফুল ভালো বিক্রির আশা করেছিলেন ফুল ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত আশানুরুপ ক্রেতার দেখা মেলেনি ! তাই পহেলা ফাল্গুন ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালবাসা দিবসে ভরা মৌসুমে রঙিন ফুল তাদের মনকে রাঙাতে পারেনি। গুচ্ছ গুচ্ছ ফুলের মধ্যে দিনভর বসে থেকেও মনে সুখ নেই ভোলার ফুল ব্যবসায়ীদের। সদর রোডের বিয়ে বাজারের ফুল ব্যবসায়ী মোঃ সবুজ আজকের পত্রিকা কে বলেন, এই ফুলের মূল ক্রেতা বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা। কিন্তু স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। আর করোনার বিধি-নিষেধ থাকায় সাধারণ ক্রেতাও কম। তাই আশানুরূপ ক্রেতা না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন তিনি ও তার মত অনেক ফুল ব্যবসায়ী। তিনি আরও বলেন, এ বছর ফুলের পাইকারি বাজার চড়া। তাই আমাদেরও বেশি দামে ফুল বিক্রি করতে হচ্ছে। গত বছর একটি গোলাপ বিক্রি করেছি ৫০ টাকয়। আর এ বছর একটিই গোলাপ বিক্রি করছি ১০০ টাকায়। এ ছাড়া গত বছর একটি রজনীগন্ধার গুচ্ছের দাম ছিল ১৫ টাকা। আর এবার তা ৩০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। গত বছর ফুলের বান্ডিল ছিল ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা। আর এ বছর তার দাম ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা। গত বছরও দুই দিনে ৪০/৪৫ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করেছেন। কিন্তু এ বছর গত রোববার ও গতকাল সোমবার দুই দিনে মাত্র ২০ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করেছেন সবুজ। এ ছাড়া মহামারি করোনা পরিস্থিতির কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হচ্ছে। এতে বিয়ে বা সামাজিক অনুষ্ঠান, নানা ধরনের পারিবারিক আয়োজনও কমে গেছে। এদিন তরুণ-তরুণীরা সবচেয়ে বেশি ফুল কিনেন। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অনেকেই বাড়িতে অবস্থান করছেন। স্কুল-কলেজও যদি খুলত, তা হলে হয়তো খানিকটা লাভের মুখ দেখা যেত। প্রায় একই কথা জানিয়ে যুগীরঘোল এলাকার ফুল বয়বসায়ী আঃ রহমান বলেন, এ বছর স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় ফুল বিক্রি কম হয়েছে। তিনি বলেন, সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩০ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করেছেন তিনি। কিন্তু এর আগে পহেলা ফাল্গুন ভালবাসা দিবসে আরও বেশী ফুল বিক্রি করেছেন। যে পরিমাণ ফুল মজুত করা হয়েছে সেগুলো নষ্ট হওয়া নিয়ে চরম আশঙ্কায় রয়েছেন ফুল ব্যবসায়ীরা। সবুজ ও রহমানের মতো হতাশা নিয়ে ভোলায় অনেক ফুলের দোকানে সাজিয়ে রাখা হয়েছে বাহারি জাতের ফুল। নানা দামে বিক্রি হয় নানা সৌন্দর্যের এসব ফুল। কিন্তু আশানুরূপ ক্রেতা নেই। করোনার অব্যাহত লোকসানের মুখে পরিশ্রম করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেও এবার বাধা হয়েছে ওমিক্রন। সংক্রমণের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব ধরনের সমাবেশ ও সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় ফলে ফুল বেচাকেনা কমেছে। এতে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ফুলের বিক্রি কমেছে অর্ধেকেরও বেশি। এ অবস্থায় হতাশায় ভুগছেন ফুল ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনার কারণে জাতীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। সরেজমিন ঘুরে দেখা গছে, সদর রোড ও যুগীরঘোল এলাকায় অনেক ফুলের দোকান প্রায় ক্রেতাশূণ্য। অনেক দোকানি আবার ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের ভয়ে তাদের দোকান কিছুক্ষন খোলা রাখছেন। আবার কিছুক্ষণ বন্ধ রাখছেন। স্ত্রীর জন্য ফুল কিনতে আসা ক্রেতা মীর জিতু, মুহাইমিনুলসহ ফুলের ক্রেতারা জানান, এ বছর ফুলের দাম অনেক বেশী। ক্রেতারা বলছেন, অন্য বছরগুলোর তুলনায় এবার ফুলের দাম ব্যাপক চড়া। ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো দাম রাখছেন। রাত ও সকালের বাজারের মধ্যে বিস্তর ফারাক। সাধারণ সময়ে গোলাপের দাম প্রতি পিস ২০ থেকে ৩০ টাকা হলেও, গতকাল ৯০ থেকে ১০০ টাকা দর হাঁকাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। দাম গত বছরের তুলনায় প্রায় তিনগুণ। সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া বাসন্তী রঙের গাঁদার চেইন আগে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হলেও বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। তবে, ভালোবাসা দিবসের জন্য আজ গোলাপের চাহিদাই বেশী।
ভালোবাসা দিবসে ভোলায় ফুলের ব্যবসা মন্দ
![](https://dailyalorkantho.com/wp-content/uploads/2022/02/256138326_1604625043209404_7397600562791092286_n.jpg)
Read Time:6 Minute, 54 Second
Average Rating
বিস্তারিত পড়ুন...
পীরগঞ্জে কোটা আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে গায়েবী জানাজা
রাণীশংকৈলে জাতীয় পার্টির দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত।
পল্লী বিদ্যুতের অনিয়ম দুর্নীতি ও কর্মচারি- কর্মকর্তাদের দাবি বাস্তবায়নে কর্মবিরতী